ঢাকা: সরকারের সিনিয়র মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সহিংসতা ও নাশকতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও সরকারকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বৈঠকে অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধি দল এ প্রতিশ্রুতি দেয়।
বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং জাসদ নেতা ও সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল উপস্থিত ছিলেন।

তারা বলেন, রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করতে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি। আমরা সহিংসতা-নাশকতার পক্ষে নই, জাতির আর্তনাদের পক্ষে। আমরা সুস্থ ধারার রাজনীতির পক্ষে কাজ করবো।
সহিংসতা ও নাশকতার বিরুদ্ধে সরকারকে সহযোগিতা করতে খোলামেলা কথা হয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, আমরা সবাই একমত হয়েছি, কোনো বিষয়ে যেন সেনসেশন তৈরি না করি!
অঞ্জন চৌধুরী বলেন, আমরা দেশের জন্য যা ক্ষতিকর, তা অবশ্যই করবো না। আবারও বলছি, আন্দোলন নয়, এটা নাশকতা। শুধু মিডিয়াপার্সন হিসেবে নয়, দেশবাসী হিসেবেও স্বীকার করেছি। দেশে যেভাবে নাশকতা হচ্ছে, তা যদি আমরা উৎসাহিত করি, তাতে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
এ ছাড়া ভারতীয় চ্যানেল বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। এটা কোনো আন্দোলন নয়, নাশকতা। তাই, নাশকতার বিরুদ্ধে দেশ-জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ব্যাপারে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করবো।
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সেন্সরশিপ আরোপিত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মোজাম্মেল বাবু বলেন, নো, নাথিং। আমাদের ওপর কোনো সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি, আমরা সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে। আমরা সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারার পক্ষে এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস এবং সহিংসতা চলতে পারে না। কাজেই ডিকটেশন বা কোনো নির্দেশনা ছিল না। এমনকি কোনো অনুরোধও করা হয়নি। এখানে বিষয়গুলো পর্যালোচনা হয়েছে।
পর্যালোচনার পর মিডিয়ার মানুষ হিসেবে আমরা একমত হয়েছি, এখন যেগুলো চলছে, তা সহিংসতা। বার্ন ইউনিটের যে চিৎকার, তা জাতির আর্তনাদ। আমরা জাতির আর্তনাদের পক্ষে। আর্তনাদ যারা সৃষ্টি করে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে।
শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, দেশে আন্দোলনের নামে নাশকতা ও সন্ত্রাস চলছে। এ কারণে অনেক কিছুই মানুষের অগোচরে। মানুষ জানতে পারছে না দেশের অবস্থা। আমদানি-রফতানি স্বাভাবিভাবে চলছে। মানুষ তা জানতে পারছে না। এই জিনিসগুলো তুলে ধরা এবং পাশপাশি হাইওয়েতে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ হাজার গাড়ি ঢাকা থেকে চলাচল করছে বিভিন্ন জায়গায়, এ বিষয়ে মানুষ অবহিত নয়।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দুই/একটি বাস পোড়ানো বা ট্রাক পোড়ানো, মানুষের সামনে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। সে কারণে মানুষ মনে করছেন, সারাদেশেই বোধ হয় এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ বিষয়গুলো যাতে সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয় এবং মিডিয়া অনেক বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিল না, সে বিষয়গুলো শুনেছেন মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।
তিনি বলেন, তাদের কাছে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছি। তারা সম্মত হয়েছেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, এটা রাজনীতি নয়, সন্ত্রাস এবং নাশকতা। সন্ত্রাস রাজনীতিকে গাইড করতে পারে না। আদর্শকে স্থাপন করতে পারে না। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ নাশকতা মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারে না। নিরাপত্তাহীনতা দিতে পারে।
এ কাজটি সরকার বা জনগণের বিরুদ্ধেই নয়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই এটি করা হচ্ছে, আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, বলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
বাণিজ্যমন্ত্রী:
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। কিছু সন্ত্রাসীর নাশকতার কার্যকলাপ ছাড়া স্বাভাবিক অবস্থাই তুলে ধরা হবে মিডিয়ায়, এ আলোচনা হয়।
তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আজকের এ বৈঠক গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত বৈঠক। তবে বৈঠকে সিনিয়র মন্ত্রীরা আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন। এজন্য তাদের ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, জানুযারি ২২, ২০১৫