ঢাকা, সোমবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

স্বর্ণ, ডলার পাঠানোর নামে পার্সেল প্রতারণা চক্রের অন্যতম সদস্য গ্রেপ্তার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৫০, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫
স্বর্ণ, ডলার পাঠানোর নামে পার্সেল প্রতারণা চক্রের অন্যতম সদস্য গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার মো. ফারুক  হোসেন

কখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ই-মেইল এ আসে অজানা ব্যক্তির মেসেজ। অপর পাশে থাকা ব্যক্তি নিজেকে পরিচয় দেন বিদেশে অবস্থান করা  ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয়।

 ধীরে ধীরে ভিকটিমের সঙ্গে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক।  

একপর্যায়ে স্বর্ণ, হীরাসহ মূল্যবান পাথর, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার কিংবা ইউরো ইত্যাদি উপহার পাঠানোর কথা বলে ভিক্টিমদের ফাঁদে ফেলে। প্রতারকদের দাবি করা টাকা সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্লক করে দেওয়া হতো। সাধারণভাবে পরিচিত প্রতারণার এই ধরণ নাইজেরিয়ান ফ্রড ও পারসেল প্রতারক চক্র নামেই সমধিক পরিচিত।  

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
 
এরকম একটি প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য মো. ফারুক  হোসেন (৪৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।  

সিআইডি'র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম এর একটি বিশেষ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পল্টন থানার শান্তিনগর ব্র্যাক ব্যাংক শাখার সামনে থেকে নাইজেরিয়ান ফ্রড ও পারসেল প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য মো. ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

তদন্তে জানা যায় যে, নাইজেরিয়ান নাগরিক মারলন স্যামুয়েলসসহ কতিপয় প্রতারক পরস্পর যোগসাজশে কখনও বাংলাদেশে বসে আবার কখনও দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে পার্সেলে ডলার অথবা মূল্যবান উপহার পাঠানোর ফাঁদ পেতে প্রতারণাপূর্বক বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল সংগ্রহ করে ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সম্পর্কের এক পর্যায়ে স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হীরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার/ইউরো ইত্যাদি উপহার পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। প্রতারকদের দাবি করা অর্থ তাদেরই সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হতো। এভাবে ওই নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে অর্থ জমা হওয়ার পরপরই প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দিত।

অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি'র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানতে পারে যে, এরকম মোট ১৬ জন ভিকটিমের কাছ থেকে প্রতারক চক্র সর্বমোট ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩৯৮ টাকা হাতিয়ে নেয়। গ্রেপ্তারকৃত মো. ফারুক  হোসেনের (৪৭)মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফারুক ট্রেডার্স এর পৃথক ২টি ব্যাংক হিসাব এর প্রথমটিতে ১ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার ৬৮৫ টাকা ও দ্বিতীয়টিতে ২১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৫ টাকা লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে সিআইডির অনুসন্ধানে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ার পর সিআইডি বাদী হয়ে অভিযুক্ত (১) মোমেনা আক্তার রানি (৩৭), (২) মারলন স্যামুয়েলস (নাইজেরিয়ান নাগরিক), (৩) মো. কামরুল মোকসেদ প্রকাশ সাজু (৩৫), (৪) ইমরান হাসান ইকবাল (৩৩), (৫) মো. ফারুক হোসেন (৪৩) এবং (৬) মেসার্স ফারুক ট্রেডার্স ও (৭) মেসার্স জননী ট্রেডার্সসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন এর বিরুদ্ধে মতিঝিল (ডিএমপি) থানায় মামলা করা হয়।  

মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাপর অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এজেডএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ