ঢাকা: ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে তৃণমূলের নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আরও বিনিয়োগেরও আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস ( ইউএনওপিএস) যৌথভাবে একটি উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকের শিরোনাম ছিল ‘দ্য পাওয়ার অব লোকাল: হাউ গ্রাসরুটস কমিউনিটিস ড্রাইভ এসডিজি অ্যাচিভমেন্ট ইন বাংলাদেশ’।
আলোচনায় বক্তারা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অসাধারণ উন্নতি করেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন- সমন্বয়, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, অবকাঠামো উন্নয়ন ইত্যাদি। এসব চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন সরকারের পক্ষ থেকে বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়াই আমাদের অঙ্গীকার। তাদের সফলতাই বাংলাদেশের সফলতা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মারুফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের ভিশন আছে, কিন্তু সেটিকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে স্থানীয় অংশীদারদের ক্ষমতায়ন, তাদের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা এবং উন্নত তথ্য ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি।
আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্যে বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস বলেন, বাস্তব উন্নয়ন আমাদের স্থানীয় সম্প্রদায়ের হাতে। তাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা ও সমাধান আমাদের নীতিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে অপরিহার্য।
ইউএনওপিএস বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, বিআইআইএসএস-এর সঙ্গে একত্রে আমরা স্থানীয় কণ্ঠ ও উদ্যোগকে শক্তিশালী করছি। প্রকৃত পরিবর্তন তখনই সম্ভব, যখন তা হবে অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা ও সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন কর্মের মাধ্যমে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ মিশনের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান ড. মাইকেল ক্রেজা বলেন, এসডিজি শুধু ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া নীতির মাধ্যমে সফল হতে পারে না। স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে স্থানীয় পর্যায়ে এসডিজি বাস্তবায়নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবসময় সহযোগিতা করেছে।
নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির বলেন, যখন স্থানীয় সম্প্রদায় নিজেরাই উন্নয়ন পরিকল্পনা করে ও বাস্তবায়ন করে, তখন ফলাফল হয় আরও টেকসই ও ন্যায্য। এ গোলটেবিল বৈঠক সেই শক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি পদক্ষেপ।
বৈঠক শেষে স্থানীয় তথ্য ব্যবস্থা শক্তিশালী, অর্থায়ন ব্যবস্থা উন্নত এবং সরকার, উন্নয়ন সংস্থা ও নাগরিক সমাজের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, তরুণ প্রতিনিধি ও তৃণমূল নেতারা অংশ নেন।
টিআর/আরআইএস