যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩৪ জন নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের জন্য কাউন্সেলিং কার্যক্রম শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও অভিভাবক।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, দুর্ঘটনার পরপরই গত ২৩ জুলাই থেকে কাউন্সেলিং কার্যক্রম শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক এ কাউন্সেলিংয়ে অংশ নিয়েছেন।
রোববার (২৭ জুলাই) সকালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ডান পাশের একতলা টিনশেড ভবনের তিনটি কক্ষে চলছে কাউন্সেলিং। আজকের সেশনে অংশ নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির দুইজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ব্র্যাকের প্রতিনিধি দুজন। আগামীকাল সোমবার (২৮ জুলাই) থেকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ দলও যোগ দেবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ইংলিশ ভার্সনের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম আজ কাউন্সেলিং সেবা নিয়েছে। তার চোখে মুখে আতঙ্ক বিরাজ করছে, রয়েছে ভয়ের ছাপ। কথা বলার সময় হঠাৎ একজন ওই কক্ষে আসায় মিনহাজুল চমকে উঠে।
মিনহাজের মা পারভীন আক্তার শিখা বলেন, রাতে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে চমকে ওঠে মিনহাজ। ঘুমের মধ্যেই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলে। চিকিৎসক বলেছেন, এখন ওকে টিভি, মোবাইল, কম্পিউটার থেকে দূরে রাখতে হবে। প্রতিদিন স্কুলের আশেপাশে একবার হলেও ঘুরে যেতে হবে— তা ওর স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনবে।
অন্য এক অভিভাবক পপি আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, এখানে এসে আমার উপকার হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে যে আতঙ্ক কাজ করছিল, সেটা দূর হয়েছে। এখন আমাদের ছেলেমেয়েদেরও ওই কথা বলবো। যাতে কোনো ভয় না করে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাউন্সেলিং কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শাহপরানেওয়াজ ইশা বাংলানিউজকে বলেন, দুর্ঘটনার সময় আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। মানসিকভাবে তারা এখনো ট্রমার মধ্যে আছেন। কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাদের ভয় কাটিয়ে তুলে আবারও স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
তিনি জানান, আজকের কাউন্সেলিং সেশনে ২৩ জন অংশ নিয়েছে। সব মিলিয়ে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৫০ জন ছাড়িয়ে গেছে। আগামীকাল থেকে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জেডএ/এমজে