সাভার (ঢাকা): বেঁচে বাঁচতে প্রয়োজন অক্সিজেন। আর অক্সিজেনের জন্য প্রয়োজন বৃক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার ধামরাইয়ে ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা জুড়ে মাসব্যাপী তিন হাজার গাছের চারা রোপণ করছেন তিনি। এর আগে তিনি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ধামরাইয়ের গাছে গাছে পাখির বাসা তৈরি করে দেন।
বৃক্ষরোপণের সাথে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা জানান, দেশীয় প্রজাতির অনেক গাছ আজ বিলুপ্তির পথে। এসব গাছ শুধু অক্সিজেনই সরবরাহ করে না বরং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এসব গাছের প্রয়োজনীয়তা ও বৃক্ষ সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য উপজেলা জুড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, ধামরাইয়ে বিগত সময়ে ব্যাপক বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে। সড়কের পাশের গাছ, বিভিন্ন জায়গার গাছ কেটে পরিষ্কার করে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় এখানে বৃক্ষ রোপণ করা হয় নি। সবাই নিজের চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক দলের সকল মানুষের কথা ভেবে উপজেলা জুড়ে বৃক্ষ রোপণ করেছেন। এই কর্মসূচি অবশ্যই প্রসংশার দাবিদার। আমরা চাই উপজেলাবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি হাতে নিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখবে স্বেচ্ছাসেবক দল।
স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সুজন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোনো ধরনের কর্মসূচি পালন করতে পারি নি। একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে যে দায়িত্ব রয়েছে, দেশের প্রতি, মানুষের জন্য যে কিছু করার রয়েছে, সেটা থেকেও আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা মানুষের জন্য কিছুই করতে পারি নি। দীর্ঘ ১৭ বছর পরে আমরা মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা বাকি জীবনে ধামরাইবাসীর জন্য তথা মানুষের জন্য, পরিবেশের জন্য কিছু করতে চাই।
সম্প্রতি ধামরাইয়ের আলীনগর এলাকায় গাছের চারা রোপণের মধ্য দিয়ে উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে গাছের চারা রোপণ শেষ হয়। এসময় নাজমুল হাসান অভি বলেন, আমরা ধামরাই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ও ১৬ টি ইউনিয়নের তিন হাজার বৃক্ষ রোপনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছিল।
ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নাজমুল হাসান অভি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ধামরাই পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করি। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পৌরসভার ছয়টি ওয়ার্ডে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শেষ শেষ হয়। সামনে পৌরসভার আরও ৩টি ওয়ার্ডে কর্মসূচি শেষ হবে। আরও চারটি ইউনিয়নে বৃক্ষ রোপণ সফলভাবে শেষ করার মাধ্যমে তিন হাজার গাছ বিতরণ ও রোপণ শেষ হবে।
বিগত স্বৈরাচার সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রত্যেক এলাকায় বিপুল সংখ্যক গাছ কেটে ইটভাটায় দেদারছে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সফলভাবে তারা সম্পন্ন করেনি। তবে মাঝে মধ্যে তারা ফটোসেশান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছেন। যা অত্যন্ত লজ্জার। আমরা লোক দেখানো কর্মসূচি হাতে নেই নি। এলাকাবাসী আমাদের সাথে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এই স্বল্প সময়ে, বৃষ্টির মৌসুমে তিন হাজার গাছ রোপণের মধ্য দিয়ে মূলত মানুষের মধ্যে সচেতনতা আনার চেষ্টা আমরা করেছি। ইতিমধ্যে আমরা সাড়া জাগাতে পেরেছি। মানুষ যাতে আরও বেশি বেশি গাছ রোপণ করে ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে ভূমিকা রাখে তার জন্য উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। এছাড়া ধামরাইয়ে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গাছে গাছে পাখির বাসা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
মাস জুড়ে এই কর্মসূচিতে নাজমুল হাসান অভির সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ মিয়া, ধামরাই পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুম আহমেদ, সদস্য সচিব রাশেদুল ইসলাম রাজু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আহমেদ শাওন, সম্রাট বাবর, পারভেজ পাঠান, ছাত্রদল নেতা সাইখ আহমেদসহ শতাধিক নেতাকর্মী।
এমএম