ঢাকা, সোমবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৬ মে ২০২৫, ২৮ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

সন্তানের পিতৃপরিচয় চেয়ে নারীর সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:২০, মে ২৬, ২০২৫
সন্তানের পিতৃপরিচয় চেয়ে নারীর সংবাদ সম্মেলন মবিনা জান্নাত

ঢাকা: রাজধানীর আদাবরের এএনএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোকাদ্দেস হানিফ টলিনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মীর অসহায়ত্ব ও বৈবাহিক সংকটের সুযোগ নিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও পরে গর্ভবতী হওয়ার পর সন্তানের পিতৃপরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানানোর অভিযোগ তুলেছেন মবিনা জান্নাত নামে এক ভুক্তভোগী। তিনি মোকাদ্দেস হানিফের বিরুদ্ধে তাকে এবং তার সন্তানকে গুম ও হত্যাচেষ্টারও অভিযোগ করেছেন।

রোববার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন মবিনা জান্নাত।

সংবাদ সম্মেলনে মবিনা জান্নাত জানান, ২০১৭ সালে তার পারিবারিকভাবে খোরশেদ আলম রোমেল নামে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামীর হাতে দীর্ঘদিন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০২০ সালে তিনি তালাকপ্রাপ্ত হন।

এরপর চাকরির সুবাদে এএনএইচ গ্রুপের এমডি মোকাদ্দেস হানিফের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মবিনার অভিযোগ, হানিফ তার বৈবাহিক সংকটের সুযোগ নিয়ে তাকে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করেন এবং পরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার একই ধরনের কাজ করেন। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে মবিনা জানতে পারেন, তিনি সন্তানসম্ভবা। এসময় মোকাদ্দেস হানিফ বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন এবং সন্তানের দায় নিতে অস্বীকৃতি জানান।

সন্তান জন্মের পর সামাজিক স্বীকৃতি এবং আইনি নিরাপত্তা পেতে মবিনা ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেন। পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে মোকাদ্দেস হানিফই সন্তানের জৈবিক পিতা। তবে হানিফ সন্তানের পিতৃত্ব স্বীকারে রাজি হননি। বরং রাজনৈতিক যোগাযোগ ও ক্ষমতা ব্যবহার করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মবিনার অভিযোগ, বিশেষ একটি সংস্থা ব্যবহার করে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা করা হয়েছে।

মবিনা বলেন, মামলার পর মোকাদ্দেস হানিফের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তবে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সহযোগিতায় তিনি ৫ মে জামিনে বের হয়ে যান। এরপর থেকে মবিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমি সন্তানের পিতৃপরিচয়ের জন্য লড়াই করছি। অথচ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রাণনাশের হুমকি এবং সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা চলছে। মবিনা আরও বলেন, তার আড়াই বছরের মেয়েটি জন্ম থেকে হার্টে ফুটো। আর্থিক সংকটের কারণে তিনি সন্তানের চিকিৎসা চালাতে পারছেন না। জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে, কিন্তু মোকাদ্দেস তার ক্ষমতা ব্যবহার করে তাকে হয়রানি করছেন এবং চিকিৎসার জন্য কোনো সহযোগিতা করছেন না।

মবিনার অভিযোগ, মোকাদ্দেসের স্ত্রী ও বোনও অতীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাব ব্যবহার করে তাকে হয়রানি ও হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। বর্তমানে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে মবিনা ও তার সন্তানকে হয়রানি করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে মবিনা জান্নাত প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন, যাতে তার সন্তানকে বিদেশে চিকিৎসা এবং আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএনএইচ গ্রুপের এমডি মোকাদ্দেস হানিফ টলিন বলেন, এই সন্তান আমার। বিষয়টি পরবর্তীতে সুরাহা করব।

এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।