বরগুনা: সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে 'নো হেলমেট, নো ফুয়েল' কর্মসূচি বাস্তবায়নে তৎপরতা শুরু করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। এখন থেকে হেলমেট ছাড়া কোনো মোটরসাইকেল চালক বা তার সহযাত্রী দেশের কোনো রিফুয়েলিং স্টেশন থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারবেন না।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ৫৪৩ জন, যা আগের বছরের তুলনায় বেশি। দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৩৫৯টি। আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৬০৮ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার পেছনে বেপরোয়া গতি, অপ্রশিক্ষিত চালক এবং নিরাপত্তা সরঞ্জামের অনুপস্থিতি বড় কারণ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ। অথচ বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ৩৯ লাখ চালকের। অর্থাৎ প্রায় ৭ লাখ চালক রাস্তায় নেমেছেন লাইসেন্স ছাড়াই। তার ওপর হেলমেট না পরেই তারা চালাচ্ছেন যানবাহন, ঝুঁকিতে ফেলছেন নিজেদের পাশাপাশি অন্য পথচারীকেও।
এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বিআরটিএ গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ধারা ১২৪ অনুযায়ী, এখন থেকে হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের রিফুয়েলিং স্টেশন থেকে জ্বালানি না দেওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন ২০২৪ সালের ২০ মে, স্মারক নম্বর ৩৫.০০.০০০০.০২০.২২.০০৪.২৩-৩৪০ অনুযায়ী প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়া কোনো ফুয়েল স্টেশন এই নির্দেশনা অমান্য করলে, তার বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৯২(১) ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
বরগুনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় প্রতিটি ফুয়েল স্টেশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’ নীতির ব্যত্যয় হলে শাস্তি অনিবার্য।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
আরএ