ঢাকা, শনিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬ মহররম ১৪৪৭

আইন ও আদালত

চার শিশুর ধর্ষণ মামলা বাতিল: ওসিসহ ৭ পুলিশকে বরখাস্তের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:২৯, জুন ১৩, ২০২১
চার শিশুর ধর্ষণ মামলা বাতিল: ওসিসহ ৭ পুলিশকে বরখাস্তের নির্দেশ

ঢাকা: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে চার শিশুর বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলা বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই ঘটনায় থানার তৎকালীন ওসিসহ সাত পুলিশ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এছাড় বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহর ফৌজদারি বিচারিক এখতিয়ার প্রত্যাহার করে তাকে দেওয়ানি মামলার দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছে।

চার শিশুকে গ্রেফতার, আদালতে হাজির করা, আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো অবৈধ ঘোষণা করে রোববার (১৩ জুন) রায় দেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ। একইসঙ্গে শিশু আইন অনুযায়ী পুলিশের দায়িত্ব-কর্তব্য নির্ধারণ করে তা গাইডলাইন আকারে প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। আদালত মোট ৭ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন।

আদালতে শিশুদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল হালিম ও জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সরোয়ার পায়েল।

গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রচারিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত বছরের ৮ অক্টোবর আদেশ দেন হাইকোর্ট।

ওইদিন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, হাইকোর্ট তাদের জামিন নিষ্পত্তি করতে আদেশ দেন। এরপর বরিশালের শিশু আদালত রাতেই তাদের জামিন দিয়েছেন। যশোরের জেলা প্রশাসককে যশোর পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে এ চার শিশুকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাইক্রোবাসে করে আজ রাতের মধ্যে তাদের অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বরিশালের সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ১১ অক্টোবর হাইকোর্টে সশরীরে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে চার শিশুকে তাদের অভিভাবকদের নিয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জের ওসিকেও হাইকোর্টে হাজিরের আদেশ দেন।

ওই আদেশ অনুসারে তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। অপরদিকে উচ্চ আদালতে ১১ অক্টোবর সংশ্লিষ্টরা হাজিরা দেন। ১১ অক্টোবর আদালত শিশুসহ সবার বক্তব্য শোনেন। আইন অনুযায়ী মামলা না নেওয়া, শিশুদের গ্রেফতার, থানায় শিশু বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন না করা ও এখতিয়ার বহির্ভূত আদেশ দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ভর্ৎসনা করে শিশুদের বিরুদ্ধে মামলার কার‌্যক্রম স্থগিত করেন।

গত ৬ অক্টোবর বাকেরগঞ্জ থানায় ছয় বছর বয়সের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, মামলার আসামিরা ওই শিশুটির খেলার সাথী। ৪ অক্টোবর বিকেলে বাগানের মধ্যে খেলার সময় তাকে তিন আসামির সহযোগিতায় এক আসামি ধর্ষণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

মামলার আসামিদের একজনের বয়স ১১ ও বাকি তিনজনের বয়স ১০ বছর দেখানো হয়েছে। পরে বুধবার ৭ অক্টোবর বিকেলে তাদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাকেরগঞ্জ আমলী আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

আদালতের বিচারক মো. এনায়েতউল্লাহ এক আদেশে আসামি চার শিশুকে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি শেষে রোববার রায় দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২১
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।