ঢাকা: গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অষ্টম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন সকাল ১১টা ২৫ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। পাঁচজন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি দেন। তারা হলেন, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী, একই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা, শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার এবং শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের মা হোসনে আরা বেগম।
সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের মতো জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও ফাঁসির দাবি জানান।
জবানবন্দি শেষে শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন তাদের জেরা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ২৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম শুনানি করেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ আরও অনেকে।
এর আগে, গত ২৪ আগস্ট সপ্তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সেদিন তিনজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী মো. গিয়াস উদ্দিন, একই প্রতিষ্ঠানের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম এবং কুষ্টিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম।
এর আগে, ২০ আগস্ট ষষ্ঠ দিনে চারজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ পারভীন, ইবনে সিনা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুল বান্না এবং শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের মা সোনিয়া জামাল।
এর আগে ১৮ আগস্ট পঞ্চম দিনের সাক্ষী হিসেবে শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল এবং রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন সাক্ষ্য দেন।
গত ১৭ আগস্ট সাক্ষ্য দিয়েছেন সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম।
গত ৬ আগস্ট সাক্ষ্য দেন রিনা মুর্মু ও সাংবাদিক এ কে এম মঈনুল হক। ৪ আগস্ট পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন জবানবন্দি দেন। ৩ আগস্ট প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।
এ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও একজন আসামি ছিলেন। তবে তিনি নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
ইএসএস/আরআইএস