২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
শুনানি শেষে বুধবার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশের জন্য ২১ আগস্ট দিন রেখেছেন।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মামলায় আজকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেছেন। আগামী ২১ আগস্ট এই চার্জ গঠনের ওপর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। ওইদিন নির্ধারণ হবে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হবে কি না নাকি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন।
গ্রেপ্তার আট আসামির একজন পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত হোসেনের আইনজীবী এস এম মেরাজুল আলম বলেন, আরাফাত হোসেন একজন নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক। তার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না এবং গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক। একজন নিরস্ত্র পুলিশ কিভাবে গুলি করে মারতে পারে এটা আমার জানা নেই। এটাই আদালতে বলেছি। এই মামলায় তিনি অব্যাহতি পাওয়ার অধিকার আছে। আদালত আদেশের জন্য ২১ আগস্ট দিন রেখেছেন।
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, পুলিশের যে র্যাংক থাকে সেখানে যারা থানাতে কাজ করে তাদের নামের পাশে ব্যাকেটে নিরস্ত্র থাকে। তার মানে এই না যে তিনি অস্ত্র বহন করেন না। তিনি অস্ত্র বহন করেছেন কি না ওটা ভিডিও তথ্যে প্রমাণিত আছে। ওনাদের রেজিস্ট্রারে বলা ছিল তার কাছে কি অস্ত্র ছিল কি ছিল না। এটা সাক্ষ্যে প্রমাণ হবে।
১৬ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা আট আসামি হলেন, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল হোসেন ও কনস্টেবল মুকুল।
আর সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ আট আসামি পলাতক রয়েছে। তাদের পক্ষে দুইজনকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ২ জুলাই সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছিলেন আদালত।
এ মামলায় ১৭৩ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেল তিনটার দিকে আশুলিয়া থানার সামনে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর বাইরে আরও একজন গুলিতে গুরুতর আহত হন। একজনকে জীবিত ও পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় প্রথমে একটি ভ্যানে তোলা হয়। সেখান থেকে পুলিশের একটি গাড়িতে তোলে পুলিশ। পুলিশের গাড়িতে এই ছয়জনকে (যার মধ্যে একজন জীবিত) আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় যারা শহীদ হয়েছেন, তারা হলেন সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি, আবুল হোসেন ও একজন অজ্ঞাত।
ইএস/এএটি