ঢাকা, বুধবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৪ সফর ১৪৪৭

আইন ও আদালত

গণহত্যার নির্দেশদাতা বেশিরভাগের বিচার ডিসেম্বরের মধ্যে: চিফ প্রসিকিউটর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:০৬, জুলাই ২৯, ২০২৫
গণহত্যার নির্দেশদাতা বেশিরভাগের বিচার ডিসেম্বরের মধ্যে: চিফ প্রসিকিউটর অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতাদের বড় অংশের বিচার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমাদের শহীদদের পরিবার, শহীদদের স্বজন, ভিকটিমদের আবেগকে যেমন অ্যাড্রেস করতে হয়, তাদের বিচারের যে দাবি, যে তৃষ্ণা, সেটা যেমন অ্যাড্রেস করতে হয়, একইভাবে আইন, আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড, আসামির অধিকার এগুলোকেও মেইনটেন করতে হয়। সেটা করতে যে যুক্তিসংগত সময় দরকার, সেটা আমরা নিয়েছি, সেটা আমরা নিচ্ছি। কিন্তু তার অর্থ এ নয় যে, এ বিচার বছরের পর বছর সময় লাগবে, তা না। যেভাবে বিচার প্রক্রিয়া আগাচ্ছে, টপ কমান্ডারদের বিচার একটা বড় অংশের বিচার, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সমাপ্ত হবে বলে আমরা আপনাদের আশ্বাস দিতে পারি।

তিনি বলেন, আপনারা যারা বিচারকার্যের বাইরে থাকেন, যারা বিচারের ব্যাপারে নন টেকনিক্যাল পারসন, তারা অনেক বিষয় হয়তো বিচারের ব্যাপারে বুঝতে পারেন না। আবেগের জায়গা থেকে তারা অনেক কথাই বলেন। আমরা বুঝি, এটা তাদের আবেগের কথা। যেমন বলা হয়, এক বছর হয়ে গেল বিচার কেন হলো না, একটা রায় হলো না? করেন কি আপনারা? একটা বিচার এবং সেটা যদি গণহত্যার মতো ক্রাইমস অ্যাগেইনস্ট হিউম্যানিটির মতো মামলার বিচার হয়, সেটার বিচার কখনোই এভাবে দ্রুততার সঙ্গে করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, মোবাইল কোর্টের ক্ষেত্রে যেটা করা সম্ভব হয়, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনালে আমাদের পক্ষে সেই ধরনের বিচার করা সম্ভব নয়। এটার একটা নির্দিষ্ট প্রসিডিউর আছে। সেই প্রসিডিউর আমাদের ফলো করতে হয়। আমরা সেপ্টেম্বর মাসে দায়িত্ব নিয়েছি। নভেম্বর পর্যন্ত কোর্ট সবকিছু ঠিকঠাক হতে সময় লেগেছে। তারপরে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে, ছয় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে প্রথম তদন্ত রিপোর্টটা কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা দিতে পেরেছেন।

চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, আমাদের প্রথম তদন্ত রিপোর্ট ছয় মাসের কম সময়ে আমরা পেয়েছি। এ মুহূর্তে চারটা মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে। আপনারা অনেকেই বলেন, বিচার দৃশ্যমান দেখি না। বিচার দৃশ্যমান। চারটা মামলার ওপেন বিচার চলছে। আমরা লাইভ সম্প্রচার করেছি কিছু কিছু অংশ। আগামী ৩ আগস্ট প্রথম সাক্ষী হবে শেখ হাসিনার মামলায়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।  

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানের শুরুর পর জুলাই আন্দোলনে নিহত ও সম্প্রতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে হতাহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব (বাজেট ও উন্নয়ন) রুহুল আমীন। এরপর জুলাই আন্দোলন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জুলাই আন্দোলনে শহীদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দিন, শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসন প্রমুখ।

এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।