ঢাকা: জুলাই আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা এলাকায় শাহিনুর বেগম নামে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার (২১ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানা তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সিএমএম আদালতের যাত্রাবাড়ী থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরীফুজ্জামান এ তথ্য দিয়েছেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক কাজী রমজানুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আসামি পুলিশের একজন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি। তিনি অসুস্থ। একই ধরনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। গ্রেপ্তারের একদিনের মাথায় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছে। তাই যেকোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ইকবাল তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার ইকবাল বাহারকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত জুলাইয়ের গণআন্দোলনের সময়ে তিনটি হত্যা মামলার আসামি ইকবাল বাহার। ঢাকার গুলশান, মিরপুর মডেল ও যাত্রাবাড়ী এই মামলাগুলো দায়ের হয়।
যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনের সময় গত ২২ জুলাই কাজলা ফুটব্রিজের নিচে সাধারণ ছাত্ররা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলেন। সেখানে শাহিনুর বেগম খাওয়ার পানি সরবরাহ করেন। আন্দোলনকারীদের ওপর দেশীয় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ করা হয়।
এ সময় শাহিনুর মাথায় গুরুত্বর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশেপাশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক মাস ৯ দিন পর ৩১ অগাস্ট তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় শাহিনুরের মেয়ে হাবেজা আক্তার বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৯৭ জনের নামে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও অচেনা আরও ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইকবাল বাহার মামলার ২৬ নম্বর আসামি।
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে তিনি এএসপি হিসেবে পুলিশে যোগ দেন। ২০১৬ সালে তাকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার করা হয়। এর আগে তিনি রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এবং ঢাকা ও যশোরের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালে তিনি অবসরে যান।
কেআই/এমজে