ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২, ১৭ জুন ২০২৫, ২০ জিলহজ ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জুলাই হত্যার বিচারকাজ নির্ভয়ে করে যাওয়ার প্রত্যয় ট্রাইব্যুনাল-২ চেয়ারম্যানের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:০৮, জুন ১৭, ২০২৫
জুলাই হত্যার বিচারকাজ নির্ভয়ে করে যাওয়ার প্রত্যয় ট্রাইব্যুনাল-২ চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ফাইল ছবি

ঢাকা: ভয় ও পক্ষপাতহীনভাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী।  

তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন যে, তারা আল্লাহর ওপর ভরসা করে কাজ করবেন এবং কোনো ভয় পাবেন না, এমনকি যদি তাদের ওপর হামলাও হয়।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী এ কথা বলেন।

গত ৮ মে সরকার তাকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করে। এই ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারপতি নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-২-এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।  

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি নজরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছর ধরে যারা ক্ষমতা দখল করে নিষ্ঠুর শাসন চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায়নি। শত শত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে।  

তিনি বিচারকদের পক্ষ থেকে আহতদের দুর্ভোগ কমানোর চেষ্টার কথাও জানান।

ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবেন এবং তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করা যায়। তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও মানবাধিকারের বিষয়গুলো মেনে চলবেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, এই ট্রাইব্যুনালের কাছে তাদের প্রত্যাশা হলো সব অন্যায়-অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং এই বিচার প্রক্রিয়ায় যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে।  

তিনি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বের ওপর জোর দেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ‘দিনের ভোট রাতে করার সাহস’ না পায়।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনাল-২-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে কিছু মামলা এখানে আসবে।  

তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিচারের অগ্রগতি দেশবাসী দেখতে পাবে। গুমের আতঙ্ক থেকে জাতিকে উদ্ধার করতে হলে অতীতের সব অপরাধের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, এই আন্দোলনে কমপক্ষে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার আন্দোলনকারী আহত হয়েছে। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, এই হত্যাকাণ্ড সমন্বয়ের ভূমিকায় ছিলেন খোদ শেখ হাসিনা।

হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার ঘোষণা দেওয়ার পর গত বছরের ১৪ আগস্ট তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ গঠন করা হয়েছিল।

ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।