ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়কে মেনে নিয়েছে প্রসিকিউশন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রায় ঘোষণার পর হাইকোর্টের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এই কথা জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আজ এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলার রায়ের দিন ধার্য ছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আমরা রায় গ্রহণের জন্য আপিল বিভাগে উপস্থিত ছিলাম। একটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোনো রায়ের ব্যাপারে মন্তব্য করাকে আমি আইনসিদ্ধ মনে করি না। তবে আমরা শুনানিতে যে প্রসঙ্গে কথা বলেছিলাম, আজকের এই রায়ে আমরা তারই প্রতিফলন দেখতে পেয়েছি।
গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে তাদের যে মূল সাবমিশনটা ছিল, সেটি হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে জাজমেন্ট ৫ আগস্টের আগে হয়েছে, সেগুলোতে আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতা ছিল না। আপিল বিভাগও এটিকে অ্যাফার্ম করেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতা প্রয়োজন নেই। এই যুক্তিতর্কের ব্যাপারে প্রসিকিউশন প্রথম থেকেই বলেছে, এই যুক্তিতর্কের ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কারণ এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এখানে আন্তর্জাতিক আইনের ডেফিনেশন অব ক্রাইমস এবং মুডস অব লাইবেলিটির প্রযোজ্যতা প্রয়োজন। তা না হলে আমরা যে সমালোচনা আগে ট্রাইব্যুনালের রায়ের ক্ষেত্রে করেছি, এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নয়, সেটি বহাল রয়ে যায়। এজন্য আমরা আপিল বিভাগে সাবমিশন রেখেছিলাম, আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতা প্রয়োজন। এটি যে প্রসিকিউশন এবং বর্তমান সরকার চায়, তার প্রমাণ হলো আমরা প্রসিকিউশনে যোগদানের পর পরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ কে সংশোধন করে আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতাকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এজন্য আজ আপিল বিভাগ যখন বলেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতা প্রয়োজন, এই ব্যাপারে আমাদের প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এখনো একমত পোষণ করছি এবং এই রায়ের পক্ষে এখনো কথা বলছি।
তিনি আরও বলেন, আজহারুলের মামলায় যে মেরিটগুলো ছিল, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা আপিল বিভাগে বলেছিলাম, এটি আপ টু ইউর লর্ডশিপ ডিসিশন। লর্ডশিপ এই মেরিট বিবেচনায় এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে রায়কে আমরা মেনে নিয়েছি এবং আমরা এটি মেনে নিতে বাধ্য।
এর আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দেন।
এসসি/আরবি