ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২ মহররম ১৪৪৭

আইন ও আদালত

ট্রাকে তরুণী ধর্ষণ, চালকের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩৫, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
ট্রাকে তরুণী ধর্ষণ, চালকের আমৃত্যু কারাদণ্ড ট্রাকচালক সোহেল রানার আমৃত্য কারাদাণ্ড

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে ট্রাকের কেবিনে এক তরুণী (২০) যাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় মো. সোহেল রানা (৩৬) নামে ট্রাকচালককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম সালমা খাতুন আসামির উপস্থিতিতে এ দণ্ড ঘোষণা করেন।  

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল রানা বগুড়া জেলা সদরের আশোকোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মো. মনসুর আলীর ছেলে। মামলার অপর আসামি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার সোবাহানপুর গ্রামের মো. জহুরুল শেখের ছেলে ট্রাকের হেলপার ওহাব শেখ (৩০)। তিনি ২০২৩ সালের ১২ মে জেলহাজতেই মারা যান।  

নির্যাতিত তরুণীর বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার শিমলা মধ্যপাড়া গ্রামে।  

২০২১ সালের ২২ জুন কোভিড-১৯ এর প্রকোপে সারাদেশে লকডাউন থাকায় স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। সেদিন বিকেলে ট্রাক নিয়ে গাজীপুরের চন্দ্ৰা থেকে দুজন পুরুষ ও একজন তরুণী যাত্রী নিয়ে চালক সোহেল রানা এবং হেলপার ওহাব শেখ বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পৌঁছালে হেলপার ট্রাক থামিয়ে যাত্রীদের বলেন, ট্রাকটি নষ্ট হয়ে গেছে, সারতে অনেক সময় লাগবে। আপনাদের কারও কোনো কাজ থাকলে এখানেই সেরে নেন।  

এ সময় পুরুষ যাত্রী দুজন নেমে রাস্তার পাশে ঘোরাফেরা করতে থাকেন। তবে তরুণী যাত্রী ট্রাকের কেবিনেই বসে থাকেন। পুরুষ যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পরই হেলপার ওহাব চালক সোহেল রানা ও ওই তরুণীকে ভেতরে রেখে বাইরে থেকে কেবিনের দরজা আটকে দেন। এরপর চালক সোহেল রানা তরুণীকে ধর্ষণ করেন। নির্যাতিতা তরুণীর চিৎকারে বাইরে থাকা যাত্রীরা ট্রাকের লুকিং গ্লাস দিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি দেখতে পান। তখন ইউনুস আলী ওরফে সুমন নামে এক যাত্রী ট্রাকের কাছে গিয়ে ধর্ষণের ভিডিওটি মোবাইলে ধারণ করতে থাকেন।

ভিডিও ধারণের বিষয়টি টের পেয়ে চালক ও হেলপার ওই দুই যাত্রীকে রেখেই ট্রাক নিয়ে বগুড়ার দিকে চলে যায়। এ সময় ইউনুস আলী সুমন ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন। পুলিশ দ্রুত কড্ডার মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে চালক-হেলপারকে আটক এবং নির্যাতিতা তরুণীকে উদ্ধার করে।  

এ ঘটনায় নির্যাতিতা তরুণীর বাবা বাদী হয়ে ২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ট্রাকচালক সোহেল রানা ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক আজ এই রায় ঘোষণা করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।