ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

ইসলাম

অধিকহারে কথা বললে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়

ইসলাম ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:৩৭, আগস্ট ২৬, ২০২৫
অধিকহারে কথা বললে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় প্রতীকী ফটো

প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কথা অনুচিত। অপ্রয়োজনীয় কথার মধ্যে মিথ্যা মেশানো থাকে অনেক সময়।

অধিকহারে কথা বলা কিংবা মিথ্যা কথা বলার মাধ্যমে বিরোধ-বিতর্ক ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। ক্ষেত্র বিশেষে সংঘাতও দেখা দিতে পারে। বাকসংযম বা পরিমাণ মাফিক কথা বলা বিবাদ-বিসংবাদ ও ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। বাকসংযমের একটি জরুরি বিষয় হলো, সততা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কথা বলা।

অপ্রয়োজনীয় কথা সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলা। বিরোধের শঙ্কা থাকলে তর্কালোচনায় না জড়িয়ে নীরব থাকা। অহেতুক তর্ক করা দৃষ্টিকটু ও মূর্খতা প্রমাণ করে। আর নৈতিকভাবে বিরত থাকা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়।

চিন্তায়-মননে ও চলনে-বলনে, সর্বোপরি জীবনের সামগ্রিক ক্ষেত্রে একজন সত্যিকার মুমিন বান্দার জীবনাচার কেমন হওয়া উচিত—তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা রয়েছে রাসুল (সা.)-এর হাদিসে। বাক্য ব্যয়ে পরিমিতিবোধ বা বাকসংযমকে তিনি প্রতিটি মুমিনের অন্যতম অপরিহার্য গুণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

পরস্পরের প্রতি সদাচরণ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে রাসুল (সা.) ঘোষণা দিয়েছেন, ‘যার কথা ও আচরণে অন্য মুমিন কখনো আহত হয় না, সে-ই প্রকৃত ঈমানদার। ’ (মুসলিম, হাদিস নং : ৪০)

বাকসংযম বা কথায় পরিমিতিবোধের উপকারিতা প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সার্বিক নিরাপত্তা প্রত্যাশা করে, সে যেন অবশ্যই নীরবতা অবলম্বন করে। ’

সাহাবি মুআজ (রা.) একবার রাসুলের কাছে জানতে চাইলেন, আমরা কি নিজেদের কথার জন্য জবাবদিহিতার মুখোমুখি হব? রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন, ‘মুআজ! তোমার কথায় অবাক হতে হয়, জিহ্বার কারণেই তো মানুষকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২৬১৬)

প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ ও মুসলিম মনীষী আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহ.) বলেন, প্রতিটি জিহ্বার কাছেই আল্লাহ উপস্থিত রয়েছেন। অতএব, নিজের কথাবার্তা সম্পর্কে অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করা উচিত।

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তার উচিত কল্যাণকর কথা বলা, নয় তো চুপ থাকা। ‘ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮)

অপর এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুমিনের জিহ্বা অন্তরের পেছনে, কথা বলার ইচ্ছা হলে সে প্রথমে অন্তরের অন্দরে প্রবেশ করে। কথা বলাটা যদি তার পক্ষে কল্যাণকর হয় তখন কথা বলে। আর ক্ষতিকর হলে নীরবতা অবলম্বন করে। ’

বাস্তবিকভাবে মুমিন ব্যক্তি কখনো দুরাচার, উচ্ছৃঙ্খল, উদাসীন, বেপরোয়া, লোভী, নিষ্ঠুর ও পরকালবিমুখ হতে পারে না। বরং বাকসংযম, বিনয়, ক্ষমা ও পরকালের ভাবনা মুমিনের অপরিহার্য গুণ।

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।