দক্ষিণ গাজার নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আল জাজিরার ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ সালামাসহ পাঁচজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তারা নিহত হন। প্রথমে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, এরপর কিছুক্ষণ পর যখন উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছান তখন আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়।
নিহত অন্য চার সাংবাদিক হলেন—সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের ফটোসাংবাদিক হুসাম আল-মাসরি; মারিয়াম আবু ডাক্কা, যিনি দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যারাবিক এবং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন; সাংবাদিক মুয়াজ আবু তাহা এবং সাংবাদিক আহমেদ আবু আজিজ, যিনি কুদস ফিড নেটওয়ার্ক ও অন্যান্য গণমাধ্যমে কাজ করতেন। গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েল-হামাস সংঘাত সংবাদমাধ্যমের জন্য এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে। জার্নালিস্ট প্রটেকশন কমিটি জানায়, ২২ মাসের এই সংঘর্ষে গাজায় মোট ১৯২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, এই হামলায় মোট ২০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাংবাদিক ছাড়াও উদ্ধারকর্মীরা রয়েছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সেনাবাহিনী এ হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
সাংবাদিকদের এই হত্যাকাণ্ড ঘটল মাত্র দুই সপ্তাহ পর, যখন খ্যাতনামা আল জাজিরা সাংবাদিক আনাস আল-শরীফ গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের সামনে তার আরও চার সহকর্মীর সঙ্গে নিহত হন। ইসরায়েল দাবি করেছিল, তারা আনাসকে লক্ষ্য করেছিল, যিনি গাজা উপত্যকার এক কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২৭৩-এ পৌঁছেছে বলে আল জাজিরার হিসাবে জানানো হয়েছে।
গাজায় সাংবাদিকদের ওপর এই হামলা ও সহিংসতা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও সাংবাদিকদের সুরক্ষার মৌলিক নীতির লঙ্ঘন। বিশ্বব্যাপী মিডিয়া সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
এসআরএ/এমজেএফ