গাজা সিটি দখলের জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি। খবর বিবিসির।
মন্ত্রিসভা যুদ্ধ শেষ করার জন্য পাঁচটি নীতিও গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয় এমন একটি বিকল্প বেসামরিক সরকার গঠন করা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, সেনাবাহিনী গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ নেবে যেখানে লাখো ফিলিস্তিনি বাস করেন।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ ইসরায়েলেও বিরোধিতার মুখে পড়েছে। হামাসের হাতে জিম্মিদের পরিবারগুলোও বলছে, এর ফলে জিম্মিদের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে।
আরও বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
পরিকল্পনাটি অনুমোদিত হওয়ার আগে দেশটির সামরিক নেতৃত্ব ও বিরোধী দলও সতর্কতা উচ্চারণ করে বলছিল, গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের মধ্যে এই পদক্ষেপ ইসরায়েলকে আরও বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকিতেও ফেলবে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় গাজা শহর দখলের অনুমোদিত পরিকল্পনা এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য পাঁচটি নীতি সম্পর্কে বিস্তারিত একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে, যা মন্ত্রিসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে বেসামরিক জনগণকে মানবিক সহায়তা দেওয়ার সময় আইডিএফ গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেবে।
যুদ্ধ শেষ করার জন্য যে নীতিগুলো নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আছে–– হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, জীবিত ও মৃত উভয় ধরনের জিম্মিকে ফেরানো, গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ, গাজা উপত্যকার ওপর ইসরায়েলি নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ এবং হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয় এমন একটি বিকল্প বেসামরিক সরকার গঠন।
বিবৃতির উপসংহারে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা বিশ্বাস করেছিলেন যে, মন্ত্রিসভার কাছে উপস্থাপিত বিকল্প পরিকল্পনা হামাসের পরাজয় বা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে পারবে না।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের বিষয়ে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা নিয়ে এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
এটি লাখ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য বিপর্যয়কর পরিণতির ঝুঁকি তৈরি করবে এবং গাজার অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবনকে আরও বিপন্ন করতে পারে, মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক সভায় বলেছিলেন সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকা।
ইসরায়েল এরইমধ্যে গাজা উপত্যকার বিশাল অংশের ওপর সামরিক নিয়ন্ত্রণ রাখার দাবি করে আসছে। জাতিসংঘের অনুমান, গাজার ৮৭ শতাংশ এলাকাই হয় স্বীকৃত সামরিক নিয়ন্ত্রণে অথবা উচ্ছেদের নোটিশের আওতায় আছে।
গত মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েল পুরো উপত্যকাকে বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র ঘোষণা করে যা পরবর্তী মাসগুলিতে ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট কিছু এলাকার জন্য উচ্ছেদের নোটিশও জারি করে, যদিও কখন এগুলো প্রত্যাহার করা হয় তা সবসময় স্পষ্ট করা হয় না।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন।
আরএইচ