গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠছে, এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ-সমর্থিত সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)।
তাদের সর্বশেষ বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ব্যাপক অনাহার, মারাত্মক অপুষ্টি ও রোগব্যাধির কারণে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, এবং গাজার অধিকাংশ অঞ্চল বর্তমানে ‘দুর্ভিক্ষের সীমায়’ পৌঁছে গেছে।
আইপিসি হলো বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা একটি যৌথ কর্মসূচি, যেখানে জাতিসংঘ, সাহায্য সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের সরকার একত্রে কাজ করে।
চলতি বছরের মে মাসেই আইপিসি সতর্ক করেছিল যে, গাজার প্রায় ২১ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে এবং গোটা উপত্যকা চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি।
তবে তারা জানিয়েছে, এই পর্যায়ে তারা গাজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দুর্ভিক্ষপীড়িত’ ঘোষণা করছে না, বরং আরও বিশ্লেষণ চালিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা নির্ধারণ করা হবে।
আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের ওপর
গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হওয়ায় ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েই চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বলেছেন, গাজায় প্রকৃত অর্থেই অনাহার চলছে।
তবে এর আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি ছিল, গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই।
গত দুই দিন ধরে ইসরায়েল প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার কৌশলগত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে, যেন ত্রাণ পাঠানো সম্ভব হয়।
ইসরায়েল বলছে, গতকাল ২০০টিরও বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক ত্রাণ জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে এবং আরও ২৬০টি ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করেছে, যেগুলো বিতরণের জন্য অপেক্ষমাণ। এর পাশাপাশি আকাশপথেও ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।
তবে জাতিসংঘ বলছে, প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০টি ট্রাক প্রয়োজন গাজার পরিস্থিতি মোকাবিলায়। সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো স্বাগত জানালেও তারা মনে করছে, এখন পর্যন্ত পাঠানো ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
আজ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার গাজা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক ডেকেছেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি জাতিসংঘে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরএইচ