ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত কয়রার জনগণ, নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৫৮, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫
স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত কয়রার জনগণ, নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

খুলনা: খুলনা জেলার সবচেয়ে দূরবর্তী ও দুর্গম উপকূলীয় উপজেলা কয়রার মানুষের স্বাস্থ্য সেবার সংকট নিরসনে সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) উপজেলা পরিষদের সামনে বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো'র কয়রা উপজেলা শাখার উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

দাবিগুলোর সাথে একত্বতা পোষণ করে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার বিশিষ্টজন মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে প্রদান করার জন্য কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল বাকী'র কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চরম চিকিৎসক সংকট, অবকাঠামোগত দুরবস্থা ও প্রয়োজনীয় সেবা না থাকায় মানুষকে ন্যূনতম চিকিৎসার জন্যও জেলা শহরে ছুটতে হয়। দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ সিজারিয়ানসহ সব ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। নেই কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা। দারিদ্রতার কারণে খরচ বহন করতে না পারায় বিনা চিকিৎসায় রোগ জটিল হচ্ছে। ৫০ শয্যার হাসপাতাল কার্যত ১৯ শয্যার ভবনে সীমাবদ্ধ। ৩১ শয্যার ভবন পরিত্যক্ত, আর ২০২২ সালে বরাদ্দ পাওয়া নতুন ভবনের কাজও স্থবির হয়ে পড়েছে।

মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির কয়রা উপজেলার সভাপতি সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম। তিনি তার বক্তৃতায় স্বাস্থ্য সেবার সংকট নিরসনে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো, কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ানসহ অন্যান্য অপারেশন কার্যক্রম চালু, হাসপাতালে প্যাথলজি টেস্ট, আলট্রাসোনোগ্রাফি ও এক্স-রে সেবা নিশ্চিত করা, গাইনী, মেডিসিন ও সার্জারি বিশেষজ্ঞসহ পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবল পদায়ন, চিকিৎসকদের কর্মস্থলে রাখতে আধুনিক আবাসিক ভবন নির্মাণ ও উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, ৩১ শয্যার নতুন ভবনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা চালু, কয়রা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংস্কার এবং চিকিৎসক পদায়ন ও কয়রা সদরে ৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ। শুধু আশ্বাস নয়, বাস্তবায়নের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আহ্বান জানান।

এ সময় বক্তৃতা করেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট সমাজসেবক এইচএম শাহাবুদ্দিন, মহারাজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও কয়রা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাস্টার সদউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো'র কয়রা উপজেলা শাখার নির্বাহী সদস্য প্রভাষক নুরুজ্জামান, উপকূল ও সুন্দরবন সংরক্ষণ আন্দোলনের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, ডেলিভারির সময় মৃত্যুবরণ করা এক বোনের ভাই রাসেল। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনটির সহ-সভাপতি ও কয়রা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, জিএম মোনায়েম বিল্লাহ, নির্বাহী সদস্য মাওলানা সোহরাব হোসেন, সুন্দরবন চ্যারিটির চেয়ারম্যান আবুল হাসান, বিলিভার'স এইডের পরিচালক মোঃ মেজবাহ উদ্দিন, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, ফরহাদ হোসেন, গণধিকার পরিষদের কয়রা উপজেলা সভাপতি ইয়াসিন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা মোশাররফ হোসেন রাতুল, গালিব, ইমদাদুল, কয়রা ব্লাড ব্যাংকের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, আকিবুর প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর কয়রা প্রতিনিধি মোঃ ইমতিয়াজ উদ্দিন এবং আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান।

 

এমআরএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।