ঢাকা: তামাক কোম্পানির সঙ্গে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে তামাকবিরোধী যুব সমাজ।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীতে তামাকবিরোধী যুব সমাজের আয়োজনে একটি ইয়ুথ মার্চ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।
কর্মসূচির উদ্বোধন ও স্বাগত বক্তব্য দেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেন, তামাক যে ক্ষতিকর, তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। আজকের এই তরুণদের সমাবেশ থেকে স্পষ্ট-তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি সময়োপযোগী ও জরুরি। আমি তাদের এই উদ্যোগে সম্পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি।
ইয়ুথ মার্চে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায় এবং আরও বহু মানুষ দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তামাকের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে, যা জাতির ভবিষ্যতের জন্য এক বড় হুমকি।
তারা সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে তামাক কোম্পানির বৈঠকের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) আর্টিকেল ৫.৩-এর সরাসরি লঙ্ঘন। এই ধারা অনুযায়ী, কোনো দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক আইন, বিধিমালা বা নীতিমালায় তামাক কোম্পানি বা তাদের প্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ এফসিটিসির স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইয়ুথ মার্চ থেকে সরকারের প্রতি দুটি প্রধান দাবি জানানো হয়-
১. উপদেষ্টা কমিটির তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া দ্রুত পাস করতে হবে।
এই ইয়ুথ মার্চে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয়-ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, ডরপ, নারী মৈত্রী, পিপিআরসি, প্রজ্ঞা, তাবিনাজসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন।
প্রায় ১০ হাজার তামাকবিরোধী যুব প্রতিনিধির স্বাক্ষরসংবলিত একটি দাবিনামা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
র্যালিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যান্সার হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক জনাব ইকবাল মাসুদ, ডরপের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান এবং নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি।
আরকেআর/এসআইএস