সংগীত আমাদের জীবনে আবেগের ভাষা। আমরা যখন কথা দিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি না, তখন সংগীত হয়ে ওঠে আমাদের একান্ত সঙ্গী।
যেসব অসুখে সমাধান দেয় গান-
মানসিক চাপ
রোগীকে রিলাক্সেশন থেরাপি দেওয়া হয়, যেখানে মিউজিক থেরাপির সঙ্গে বিভিন্ন ছবি দেখানো হয়। এভাবে রোগীকে শান্ত করা হয় যাতে তিনি নিজের সমস্যার কথা অবলীলায় চিকিৎসকের কাছে প্রকাশ করতে পারেন।
অটিজম
মিউজিক থেরাপি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর মন অনেকটা শান্ত করে এবং অন্য মানুষের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই সমস্যা শৈশবেই ধরা পড়ে, তাই যত কম বয়স থেকে মিউজিক থেরাপি আরম্ভ করা যায় তত ভালো।
ডিমেনশিয়া
বয়স্ক রোগী অকারণে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে রোগীর হার্ট বা সেরিব্রাল স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মিউজিক থেরাপি এই সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে এবং রোগীর মধ্যে সহযোগিতা করার মনোভাব জাগে।
অবসাদ
বয়স্কদের এবং নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগ সারাতে মিউজিক থেরাপি খুবই কার্যকর।
স্লিপ ডিজঅর্ডার
যাদের সহজে ঘুম আসে না, তাদের ক্ষেত্রে মিউজিক থেরাপি কার্যকরী। ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে থেকে আলো নিভিয়ে বা হালকা আলো জ্বালিয়ে, কোনো হালকা সুরে মিউজিক শুনলে মন শান্ত হয়ে যায় এবং ঘুম আসে। এ ছাড়া যেসব শিশুর আইকিউ লেবেল কম, যেসব রোগীর হাইপ্রেশার বা শারীরিক ব্যথা-তাদের জন্য মিউজিক থেরাপি কার্যকর।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রুমা সিদ্দিকী বলেন, যুদ্ধ, ধ্বংস- একটা কঠিন অবস্থার মধ্যে ভয় পাচ্ছে মানুষ, হারাচ্ছে বিশ্বাস-আস্থা। সঙ্গীতের মতো আগলে রাখার ক্ষমতা, অতি যন্ত্রণায় জড়িয়ে রাখার ক্ষমতা দ্বিতীয় আর কিছুতেই নেই। মিউজিক থেরাপি মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকটি স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। স্নায়ুকে পুনর্গঠন করে, পুনর্বৃদ্ধি করতে এবং আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শান্তা গুহ বলেন, সঙ্গীত ও সুরের মধ্যে মন ও স্মৃতির পুর্নগঠনের রহস্য লুকিয়ে আছে। সঙ্গীত আমাদের মনকে আচ্ছন্ন করে, শান্তি দেয়, নতুন করে ভাবতে শেখায়। কঠিন সময়ে জীবনে নতুন পথের সন্ধান দিতে পারে সঙ্গীত।
এএটি