ঢাকা, বুধবার, ৫ ভাদ্র ১৪৩২, ২০ আগস্ট ২০২৫, ২৫ সফর ১৪৪৭

ফুটবল

তিন বছর পর আবার মাঠে গড়াচ্ছে জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:১৮, আগস্ট ১৯, ২০২৫
তিন বছর পর আবার মাঠে গড়াচ্ছে জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ সভা

আশি-নব্বইয়ের দশকে জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল দেশের ফুটবল ক্যালেন্ডারের অন্যতম আকর্ষণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই জৌলুস ম্লান হয়ে যায়, আয়োজনে আসে অনিয়মিততা।

সর্বশেষ ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। এরপর দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষার পর আবার মাঠে ফিরছে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতা।

২০২৫ সালের জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ আগস্ট। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে, ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে ড্র।

আয়োজনটি ঘিরে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) অর্গানাইজিং কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি হ্যাপি। সভা শেষে তিনি জানান, প্রতিযোগিতাটি তিন মাসব্যাপী চলবে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে।

প্রতিযোগিতায় এবার অংশ নিচ্ছে দেশের ৬৪টি জেলা দল। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এবার রাখা হয়নি। আয়োজক কমিটির প্রধান বলেন, "মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও সহযোগিতায় আমরা এবার শুধুমাত্র জেলা দলগুলো নিয়েই আয়োজন করছি। এটি আন্তঃজেলা প্রতিযোগিতা হিসেবেই আয়োজন করা হচ্ছে। "

চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম পর্বে মোট ১১২টি ম্যাচ হবে। প্রতিটি ম্যাচ হবে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে। ম্যাচ ড্র হলে খেলা সরাসরি টাইব্রেকারে গড়াবে। দ্বিতীয় পর্বে উত্তীর্ণ হবে ৩২টি দল, যারা একই ফরম্যাটে পরবর্তী ধাপের খেলা খেলবে।

এবারের আয়োজনকে কেন্দ্র করে থাকছে বাড়তি কিছু আকর্ষণও। মূল প্রতিযোগিতার মধ্যবর্তী সময়ে আয়োজন করা হবে বয়সভিত্তিক দুটি টুর্নামেন্ট—একটি অনূর্ধ্ব-১৭ দল নিয়ে, অন্যটি নারীদের বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা। জেলা পর্যায়ের ফুটবল বিকাশে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে বাফুফে।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বাফুফের যৌথ পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এবারের আসর উৎসর্গ করা হয়েছে দেশের তরুণ শহীদদের স্মৃতিতে। আয়োজকরা বলছে, "তারুণ্যের উৎসব" প্রতিপাদ্যে এই আয়োজন তরুণদের আত্মত্যাগ ও স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণে তাঁদের অবদানকে স্মরণ করতেই নেওয়া হয়েছে।

দেশকে ভাগ করা হয়েছে আটটি জোনে, আর প্রতিটি জোনের নামকরণ করা হয়েছে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত আট শহীদের নামে।

তারা হলেন- মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ (মীর মুগ্ধ), নাফিসা হোসেন মারওয়া, মোহাম্মদ ওয়াসিম আকরাম, সাকিব আনজুম, আবু সাঈদ মিয়া, শেখ মো. সাকিব রায়হান, আব্দুল্লাহ আল বাহার ও গোলাম নাফিজ। বাংলা বর্ণমালার ভিত্তিতে জেলাগুলোকে ভাগ করে জোন বিন্যাস করা হয়েছে।

আয়োজক কমিটির পাশাপাশি গঠিত হয়েছে আট সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটি। এই কমিটির প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁয়াকে। এ ছাড়া উপদেষ্টা হিসেবে থাকছেন বাফুফে সভাপতি, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক, বিকেএসপির মহাপরিচালক এবং ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ক্রীড়া-১)।

দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এই জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ দেশের ঘরোয়া ফুটবলের পুনর্জাগরণে কতটা ভূমিকা রাখতে পারে, সে দিকেই তাকিয়ে আছে দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।

এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।