ঢাকা, সোমবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৭

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পাহাড়ের কান্না কেউ শোনে না!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:২১, এপ্রিল ১৭, ২০১৭
পাহাড়ের কান্না কেউ শোনে না! পাহাড়ের কান্না কেউ শোনে না!

কমলগঞ্জ থেকে ফিরে: এক সময় বড় নির্বিঘ্নেই ছিলাম আমি। আমার শরীর বেয়ে নানা প্রজাতির গাছপালা, লতাগুল্মের মেলা আর হাজারো পাখির কিচিরমিচির সব সময় লেগেই থাকতো। কিন্তু আজ সময়ের বিবর্তনে এসে সব শেষ!

নেই তেমন গাছপালা, নেই বাহারি লতাগুল্মের উপস্থিতি, নেই নানান পাখির ডাকাডাকি। কেমন যেন শূন্যতা আমার চারদিকে।

এখন আমাকে-আমাদের কেউ বেঁচে থাকতে দেয় না। সদলবলে হামলা চালায় আমাদের ওপর। কেটে-কুটে সমতল ভূমিতে পরিণত করে দেওয়ায় প্রচেষ্টা চালায় আমাদের। ধ্বংস করে দেয় আমার ওপর ভর করে জেগে ওঠা বিভিন্ন উদ্ভিদকূল। এভাবেই দেশব্যাপী আমার অস্তিত্ব আজ প্রায় শেষ হতে চলেছে।

বড় বিস্ময়ের সাথে বলতে হয়- এখন বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের মাত্র দশভাগ পাহাড়ি এলাকাটুকু নিরাপদ নয়।

কমলগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি চা বাগানের নির্জন প্রকৃতিতে আমার বাস। বছরের পর বছর এখানেই নীরবে দাঁড়িয়ে আছি আমি। ছিলাম ব্যাপক জায়গাজুড়ে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে একটু একটু করে কেটে ছোট করে ফেলা হয়েছে আমার অবয়ব।

আমি আগের মতো আর রিষ্টপুষ্ট নই; ন্যাড়া করে ফেলা হয়েছে আমাকে। এখন ছোট আকারের হয়ে পড়েছি। বিরামহীন প্রবল বর্ষণে প্রচণ্ড ভয় হয় আমার – এই বুঝে ধসে পড়লাম!

আমাদের সর্বাঙ্গজুড়ে অনেক জীববৈচিত্র্যের বসবাস। পাহাড় ধ্বংস হওয়া মানে নানান জীববৈচিত্র্যও ধ্বংস হয়ে যাওয়া। পাহাড়-টিলা টিকে থাকা মানে প্রকৃতির সুস্থতা টিকে থাকা। কিন্তু কেউ কি বুঝতে পারছে এই কথাগুলোর গুরুত্ব?

তবে নতুন প্রজন্মের প্রতি প্রগাঢ় বিশ্বাস আমার। ওরাই আমাদের দিকে হয়তো একদিন তাদের সুদৃষ্টি ফেরাবে। পাহাড়কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে ওরা প্রাণের টানে পাহাড়ের কাছাকাছি এসে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৭
বিবিবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।