তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের রাজকন্যা। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে যার খ্যাতি আকাশ ছুঁয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) কিংবদন্তি এ চিত্রনায়িকার জন্মদিন। ১৯৫৩ সালের আজকের এই দিনে বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
এবারের জন্মদিন একমাত্র ছেলে অনিকের সঙ্গে উদযাপন করার লক্ষ্যে চলতি মাসের শুরুতে কানাডা গেছেন ববিতা। এবারের বিশেষ দিনটি কীভাবে কাটবে? এ বিষয়ে ববিতা বলেন, অনিকের ছুটি নেই। আজকের দিনেও তাকে অফিস করতে হবে। সত্যি বলতে কি, এখানে ঢাকার মতো অনেক অবসর সময়ও নেই, সুযোগও নেই ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ানোর। তবে অনিক অফিস থেকে ফিরে এলে আমরা মা-ছেলে কোনো এক সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যাব, মুহূর্তটা ধরে রাখার জন্য ছবিও তুলব। এভাবেই কেটে যাবে এবারের জন্মদিন।
এই অভিনেত্রী আরও বলেন, দেশের সবাইকে খুব মিস করব। সবাইকে নিয়ে যদি জন্মদিন উপদযাপন করা যেত তাহলে ভালো হতো। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমিও দোয়া করি- যে যেখানে আছেন ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
১৯৬৮ সালে কিংবদন্তি নির্মাতা জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে অভিষেক হয় ববিতার। এখানে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। পরে ফরিদা আক্তার পপি থেকে ‘ববিতা’ হয় ওঠেন জহির রায়হানের উর্দু সিনেমা ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’র মাধ্যমে।
নায়িকা হিসাবে ববিতার প্রথম সিনেমা ‘শেষ পর্যন্ত’। এটি মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট, যেদিন ববিতার মা মারা যান। এতে তার নায়ক ছিলেন রাজ্জাক।
আলোচিত সিনেমা ‘টাকা আনা পাই’ ববিতাকে চলচ্চিত্রের শক্ত আসন দিলেও তার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সিনেমা বলা হয় সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’কে। এ সিনেমায় অভিনয় করে ববিতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পতাকা যে নায়িকা প্রথম উড়িয়েছিলেন তিনি ববিতা। ১৯৭৩ সালে বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বিয়ার’ এবং এর পরের বছর যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে ‘গোল্ডেন হিউগো’ জিতে নেয় সিনেমাটি। পাশাপাশি ভারতের রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদকসহ আরও বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে এটি।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২৫০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন এ অভিনেত্রী। স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
ববিতা অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- ‘অশনি সংকেত’, ‘নিশান’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’, ‘মায়ের জন্য পাগল’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘স্বরলিপি’, ‘তিনকন্যা’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘মিস লঙ্কা’, ‘জীবন সংসার’, ‘লাইলি মজনু’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘লাঠিয়াল’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি, ইত্যাদি।
এনএটি