ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

নির্বাচন

মুন্সীগঞ্জ থেকে সৈয়দ ইফতেখার আলম

মেয়র ঢাকার, না এলাকার তা ‘ফ্যাক্টর’

সৈয়দ ইফতেখার আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২৮, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
মেয়র ঢাকার, না এলাকার তা ‘ফ্যাক্টর’ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মুন্সীগঞ্জ পৌর এলাকা থেকে: মুন্সীগঞ্জ জেলা ঢাকা থেকে অনেক কাছে। তাই বলে এখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা মেয়র এলাকায় না থেকে ঢাকায় থাকবেন এটি মেনে নেওয়া যায় না।

এমনই বক্তব্য উঠে এলো চায়ের কাপে নির্বাচনী আড্ডা দিতে দিতে। স্থানীয় ভোটাররা চান, মেয়রকে ঢাকায় নয়, থাকতে হবে এলাকায়।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর বাড়ি রয়েছে রাজধানী ঢাকায়। তারা যাতায়াত করেন ঘন ঘন। এ বিষয়টিকে নিজেদের জন্য একটু সমস্যারই মনে করছেন স্থানীয় অনেক মানুষ।

শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে তাদের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়টি উঠে আসে। এর আগেও অনেকে বিষয়টি নিয়ে বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করেন।

২নং ওয়ার্ডের লাল মিয়া দর্পণ বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কেউ কেউ যে, তিনি ঢাকায় থাকতেন বেশি। পৌর ভবনে সময় কম দিতেন। এখন যিনি আওয়ামী লীগ থেকে দাঁড়িয়েছেন তিনিও তো ঢাকা থেকে এসে নির্বাচন করছেন। এ বিষয়টি আমাদের তেমন না ভাবালেও সবাই চান, যেন তাদের মেয়র পাশেই থাকুক সব সময়। যেকোনো প্রয়োজনেই তো মেয়রকে লাগে।

৪নং ওয়ার্ডের হজরত আলী জানান, আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতলে নতুন করে সব ঢেলে সাজানো হবে বলে তিনি মনে করছেন। ফলে সবাই সুবিধা পাবেন। ঢাকার বিষয়টি আসবে না।

মুন্সীগঞ্জ পৌর ভবনের সিকিউরিটি গার্ড রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, আমি দীর্ঘ ২৩ বছর এখানে চাকরি করছি। তবে এবার যিনি মেয়র ছিলেন (বিএনপির ইরাদত মানু) তিনি খুবই নম্র-ভদ্র লোক। তার কাছে এসে কেউ ফিরে যায়নি। তিনি যখনই অফিসে ছিলেন, মানুষকে সেবা দিয়েছেন হাসিমুখে।

তবে ইরাদত মানু ঢাকায় সময় বেশি কাটাতেন কি-না এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি রেজাউল।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হাজি মো. ফয়সাল বিপ্লবের বাড়ি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকাতেই। তার সন্তানরাও পড়েন ঢাকায়।

সে হিসেবে আরেক মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র রেজাউল ইসলাম সংগ্রাম মুন্সীগঞ্জের আদি ব্যক্তি। তার বাস এ জেলাতেই।

তবে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের চাওয়া- যে প্রার্থীই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে জিতুন না কেন, সব সময় পাশে থেকে যেন মানুষের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন। এবারের নির্বাচনে মেয়র ঢাকার, না এলাকায় তা ‘ফ্যাক্টর’- মনে করছেন কেউ কেউ আবার।

মোট চারজন মেয়র প্রার্থী আছেন এখানকার পৌর নির্বাচন। এছাড়া রয়েছেন সাধারণ কাউন্সিলর (৯ ওয়ার্ড) প্রার্থী হয়েছেন ৩৯ জন। আর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর (২ ওয়ার্ডে) পদে চারজন করে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার আয়তন ১০ দশমিক ৮৫ বর্গকিলোমিটার। মোট ভোটার ৪৫ হাজার ৪২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৩ হাজার ৯৬ জন এবং নারী ভোটর ২২ হাজার ৩৩২ জন। ভোটকেন্দ্র- প্রাথমিক হিসেবে ২৬টি। ১৯৭২ সালে এ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৩ সালে ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। পৌর এলাকার শিক্ষার হার ৬৭ শতাংশ।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর (বুধবার) দেশের ২৩৪ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হবে। এতে মেয়র পদে ৯২৩ জন এবং কাউন্সিলর পদে ১১ হাজার ১২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রায় ৭২ লাখ ভোটার এ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। দেশব্যাপী ভোটকেন্দ্র থাকছে তিন হাজারেরও বেশি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
আইএ/এএসআর

** ‘পৌর ভবনে সুখ-দুখের আলাপকারী চাই’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।