ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৬ সফর ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

সংসদীয় আসনের সীমানা কাটা-ছেঁড়ায় ফুঁসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৮, জুলাই ৩১, ২০২৫
সংসদীয় আসনের সীমানা কাটা-ছেঁড়ায় ফুঁসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর মানববন্ধন

ঢাকা: সংসদীয় আসনের সীমানায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) কাটা-ছেঁড়া করায় ফুঁসে ওঠছে বাহ্মণবাড়িয়াবাসী।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জেলার একদল সংক্ষুব্ধ নাগরিক ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের ক্ষোভের যুক্তি তুলে ধরেছেন।

একই সঙ্গে আসনের সীমানা আগের মতোই রাখার আবেদন জানিয়েছেন। এরপর বিকেলে নির্বাচন ভবন ত্যাগ করার সময় নিচে মানবন্ধনেও দাঁড়িয়েছিলেন তারা। তবে পুলিশের বাধার মুখে পরে চলে যান।

ইসি সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো দলের পক্ষ থেকে আসিনি। তবে এখানে বিএনপি, এনসিপিসহ অন্যান্য দলের নেতা ও সাধারণ নাগরিকরা রয়েছে। এদের অনেকে হয়তো ভোটেও দাঁড়াতে পারেন। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন দিয়েছি।

আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, গত ৩০ জুলাই আপনার প্রকাশিত প্রাথমিক তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার

বিজয়নগর উপজেলার (আগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন) ১০টি ইউনিয়নেকে দুই টুকরা করে ০৩ টি (চান্দুরা, হরপুর ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-২ আসনের সঙ্গে এবং বাকি সাতটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৩ সংসদীয় আসনে ভাগ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও হতাশাজনক।

এছাড়া বাস্তবিক বিষয় হলো বিজয়নগরের সকল ১০টি ইউনিয়ন তিতাস নদীর পূর্ব পার্শে পরস্পরের সঙ্গে ভৌগলিকভাবে সংযুক্ত। এ সকল ইউনিয়নগুলির জনগনের ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক বন্ধন একই ধরনের, যা একটি অভিন্ন আসনের আওতায় রাখা প্রয়োজন। এ বিজয়নগর উপজেলার সকল ইউনিয়নকে এক ও অভিন্ন সংসদীয় আসনে রাখলে এলাকার উন্নয়ন ও প্রশাসন কর্মকাণ্ড পরিচালনা সহজ ও কার্যকর হবে।

এ অবস্থায়, সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষের কাছে বিজয়নগর উপজেলা তিনটি ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন না করে পূর্বের আসনে (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৩ আসনে) রাখা অথবা একটি একক সংসদীয় আসনে পরিণত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন বিজয়নগর সাধারণ জনগণের পক্ষে-গোলাম মোস্তফা সুমন, মোজাহিদুজ্জামান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, এ কে এম গোলাম মুহীত ওসমানি, মো: বায়েজিদ মিয়া, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিনুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, মো: জহিরুল ইসলাম।

বুধবার (৩০ জুলাই) ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ৬টি করা হয়েছে। এবং বাগেরহাটের আসন ৪টি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া পরিবর্তন আনা হয়েছে ৩৯টি আসনে। এগুলো হলো-পঞ্চগড় ১ ও ২; রংপুর ৩; সিরাজগঞ্জ ১ ও ২; সাতক্ষীরা ৩ ও ৪; শরিয়তপুর ২ ও ৩; ঢাকা ২,৩,৭,১০,১৪ ও ১৯; গাজীপুর ১,২,৩,৫ ও ৬; নারায়ণগঞ্জ ৩,৪ ও ৫; সিলেট ১ ও ৩; ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩; কুমিল্লা ১,২,১০ ও ১১; নোয়াখালী ১,২,৪ ও ৫; চট্টগ্রাম ৭ ও ৮ এবং বাগেরহাট ২ ও ৩ আসন।

ইসির প্রকাশিত খসড়ার ওপর আগামী ১০ আগস্ট পর্যয়ন্ত আপত্তি জানানো যাবে। এরপর দাবি-আপত্তি শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করে চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন আসন নিয়ে দাবি-আপত্তি জানানো শুরু হয়েছে।

সীমানা পুনর্ধিারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের বলেছেন, ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। এটা ধরে জেলায় একটি আসন বাড়ালে তা গাজীপুরে হবে। এ গড়ের কম বাগেরহাটে একটি কমালে সমতা চলে আসে। দুই জেলার আসনই এফেক্টেড হয়েছে। আর কোথাও ঝামেলা নেই। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।

ইইউডি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।