ঢাকা, বুধবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২, ২৫ জুন ২০২৫, ২৮ জিলহজ ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সংসদীয় আসনের সীমানার দ্রুত খসড়া প্রকাশের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:১০, জুন ২৫, ২০২৫
সংসদীয় আসনের সীমানার দ্রুত খসড়া প্রকাশের দাবি

ঢাকা: সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া দ্রুত প্রকাশ করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। এদের মধ্যে বিএনপি কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারাও রয়েছেন।

বুধবার (২৫ জুন) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে তারা বৈঠকও করেছেন। এছাড়া একটি সংসদীয় এলাকার নাগরিকরা নির্বাচন ভবনের সামনে মানববন্ধনও করেছে। এ সময় ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়ার দাবি তুলেছেন।

সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপির সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ১৯৮৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচনী আসন ছিল, সেভাবে পুনর্বহাল করেন। এটা আমাদের সার্বজনীন দাবি। আমরা কমিশনের কাছে খসড়া তালিকা প্রকাশের জন্য আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশন আমাদের জানিয়েছে, তারা কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের আশা পূরণ হবে।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন আসন‌ থেকে জনপ্রতিনিধিরা এসেছি। আমাদের সবার দাবি হচ্ছে ২০০১ সালের সীমানা অনুযায়ী যেন সীমানা নির্ধারণ করা হয়।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ২০০১ সালে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, যেভাবে আমরা আসনভিত্তিক নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছিলাম। এবারও ঠিক সেভাবে এলাকাভিত্তিক আসনগুলো যেন পুনর্বিন্যাস করা হয়। এ ব্যাপারে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার, সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও আশ্বস্ত করেছেন অনৈতিকভাবে আসন বণ্টন হবে না। জনগণের চাহিদা মোতাবেক আসন বিন্যাস করে উপহার দেবে। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আসন পুনর্বিন্যাস করলে এ নির্বাচন কমিশনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে না।

এদিকে কুমিল্লার ৬ নম্বর নিলখী ইউনিয়ন পরিষদ যুবদলের আহ্বায়ক রাসেল মাহমুদ জানান, ১৯৫৪ সাল থেকে হোমনা-মেঘনা এক আসনেই ছিল। কিন্তু ২০০৮ সালের তৎকালীন নির্বাচন কমিশন এটি আলাদা করে। ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত সেভাবেই ভোট হয়। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে কুমিল্লা-২ আসনটি ফের আগে মতো করা হয়। অর্থাৎ হোমনা-মেঘনাবাসী পুনরায় এক আসনে চলে আসে। কিন্তু বর্তমানে অনেকেই আবার ২০০৮ সালের অবস্থায় ফিরে যেতে চাই। তাই আমরা সেটা যাতে না করা হয় সে জন্য এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। কুমিল্লা-২ আসনে হোমনা-মেঘনা বহাল রাখার আবেদন করেছি।

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনে ২০০৮ সালের সীমানা নিয়ে বিতর্কের বিষয় তুলে ধরে। এক্ষেত্রে ২০০১ সালের আসন কোনো প্রশ্ন না ওঠার কথাও বলা হয়।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে গত ১৯ জুন কমিশন বৈঠক করলেও সেদিন কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কমিশন। সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ আমরা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবো।

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭৫টি আসন থেকে ছয় শতাধিক আবেদন পড়েছে। এক্ষেত্রে অন্য আসনগুলোয় হাত দেবে না সংস্থাটি।

জানা গেছে, ১৯৭৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নির্বাচনে সংসদীয় আসনের সীমানায় তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে জনসংখ্যার ঘনত্বকে প্রাধান্য সীমানা নির্ধারণ করা হয়। এতে অনেক আসন ওলট-পালট হয়ে যায়। ঢাকার আসন সংখ্যাও ১৩ থেকে বেড়ে ২০টি করা হয়। ১৯৮৪ ও ১৯৯১ এবং ২০০৮ সালে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়।

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভৌগলিক সুবিধা, স্ট্যাটাস, জনসংখ্যা, ভোট সংখ্যা এবং ঐতিহাসিক ভিত্তিও সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে এবার বিবেচনায় নেওয়া হবে।

আইন অনুযায়ী, সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করা হলে তার ভিত্তিতে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর প্রাপ্ত দাবী-আপত্তিগুলো শুনানি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।

ইইউডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।