ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১০ সফর ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

জুলাইয়ে রপ্তানি আয়ের ভালো সূচনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:১৯, আগস্ট ৫, ২০২৫
জুলাইয়ে রপ্তানি আয়ের ভালো সূচনা রপ্তানি আয়

ঢাকা: ভালো রপ্তানি আয় দিয়ে নতুন অর্থবছরের সূচনা হয়েছে। একই সঙ্গে ধারাবাহিকতার ঈঙ্গিত দিচ্ছে দেশের প্রধান রপ্তানি আয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় চার বিলিয়ন ডলার ( ৩৯৬ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার)। যা গত বছরের একই সময়ে চেয়ে ২৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। গত বছরের জুলাই মাসে ছিল তিন বিলিয়নের কিছু বেশি (৩১৭ কোটি ৮৪ কোটি ৭০ হাজার ডলার)। সে সময় প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ২.৮৬ শতাংশ।

বিগত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৩০ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে অন্যান্য মাসের কথা বিবেচনায় জুলাইয়ে গড় রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবেও জুলাইয়ে রপ্তানি আয় বেশি ছিল।

জুলাই মাস ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প শুল্কের তিন মাস সময় সীমার শেষ মাস। এপ্রিল মাসে ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করার পর ২ শতাংশ কমিয়ে আলোচনার জন্য তিন মাস সময় বেঁধে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। জুলাই শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয় সেই সময়। ফলে পুরো মাসটি ছিল এক ধরণের অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার মাস। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি না হলে, আর যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক না কমালে জুলাই মাস জুড়ে রপ্তানি হওয়া পোশাক জাহাজ বা বন্দরে থাকতো। আর এ পোশাকের জন্য গুনতে হতো ডিসকাউন্ট। ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো এ বার্তা আগেই দিয়েই রেখেছিল। ফলে রপ্তানির জন্য জুলাই মাস খুবই গুরুত্বপূণ ছিল।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমই) সাবেক পরিচালক শোভন ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্ক ২০ শতাংশ স্থির হলে আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছি এজন্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পোশাকের ওপর দ্বিপাক্ষিক শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়েছে। যা আগের ৩৫ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। ২০ শতাংশ এখনও উচ্চ এবং মোট কার্যকর শুল্ক প্রায় ৩৬ শতাংশ হওয়ায় এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

ভারত (২৫ শতাংশ), ভিয়েতনাম (২০ শতাংশ), পাকিস্তান (১৯ শতাংশ), ও ইন্দোনেশিয়ার (১৯ শতাংশ) মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে এ সমানতা আমাদের প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতিকে কিছুটা সুবিন্যস্ত করেছে।

তিনি বলেন, কিন্তু জুলাই মাসেই আমরা স্বস্তিতে ছিলাম না। আমরা মার্কিন ক্রেতাদের সঙ্গে এই অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা ভাগ করে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছি, বিশেষ করে ৩১ জুলাই থেকে বন্ধ থাকা শিপমেন্টের জন্য। অনেক অংশীদার আগের হ্রাসের পর এরই মধ্যে ডিসকাউন্ট দিয়েছে, এবং আমরা ইতিবাচক সমাধানের আশা করেছি।

আবার তৈরি পোশাক রপ্তানির বড় বৃদ্ধির ধারাতে থাকার জন্য বেশ কিছু কারণের তুলে ধরেন বিজিএমইএ-এর আরেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানি এমনিতেই গত বছরে ভালো ছিল। সেই সঙ্গে জুনে ঈদের মাস গেছে। জুন মাসে ঈদের লম্বা ছুটি গেছে। কিছুটা হলেও রপ্তানি পেইন্ডিং ছিল; যেটা জুলাইয়ে  হয়েছে।

চলতি বছরের জুলাই মাসে সঙ্গে তুলনা করে এ বছরের জুলাইয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু গত বছরের জুলাই ছিল আন্দোলনের মাস, সে সময়ে ইন্টারনেট ব্লাকআউট ছিল। এসব কারণে রপ্তানি আয় কিছুটা হলেও কমেছে। আর ওই জুলাই মাসকে ভিত্তি মাস ধরার কারণে এবার অনেক বেড়েছে।
এসব কারণে অনেক বেশি এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে যেকোনোভাবেই হোক চলতি বছরেও ১০-১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকবেই বলেও জানান তিনি।  

তিনি বলেন, রপ্তানি আয় দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে আসার কারণে আয় বাড়ছে। অতীতে প্রতি মাসেই রপ্তানি আয় কিছুটা কম আসতো। বছর শেষে এ পরিমাণটা আরও বেড়েছে। এ বিষয়ে রপ্তানি বৃদ্ধির আরও একটি কারণ হলো অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে রপ্তানি আয় দ্রুততম সময়ে আসছে। এটা হতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক তদারকি বাড়িয়েছে। আবার প্রাবাসী আয় দেশে হুন্ডির মাধ্যমে আসা কমেছে এবং ডলারের চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে দেশে অল্প সময়ে রপ্তানি আয় আসছে।

জেডএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।