বাংলাদেশ প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে। দেশটি বাংলাদেশের একক বৃহত্তম রপ্তানি বাজার।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব পণ্য বাংলাদেশে আসে তার মধ্যে রয়েছে কৃষিপণ্য (খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম ও ভুট্টা), যন্ত্রপাতি এবং গাড়ি, পেট্রোলিয়াম, লোহা ও ইস্পাত ইত্যাদি পণ্য। আর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব পণ্য যায় তার মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, জুতা, টেক্সটাইল সামগ্রী, কৃষিপণ্য ইত্যাদি। শুল্ক কমানোর দরকষাকষিতে সুবিধা পেতে বাজেটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা শতাধিক পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর দরকষাকষিতে সুবিধা পেতে ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার অর্ডার দিয়েছে সরকার। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে ৭ লাখ টন করে গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ট্যারিফ চুক্তির খসড়া পাওয়ার পর কয়েক দফায় কাজ করা হচ্ছে। ওয়াশিংটনে দুই দফা আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া অনলাইনেও মিটিং হয়েছে। আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রকে চূড়ান্ত অবস্থান জানায় বাংলাদেশ। তাদের সব খসড়ার জবাব দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের অবস্থান জানানো হয়েছে। ১ আগস্টের আগে ওয়াশিংটনে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ-ইউএসটিআরের (যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য আলোচনাকারী সংস্থা) অফিসে সরাসরি বৈঠক হবে। বৈঠকে থাকবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বাণিজ্য সচিব।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িংয়ের অর্ডার দিয়েছে। ভারত, ভিয়েতনাম ১০০টি করে অর্ডার দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ৫০টি। এরকম অর্ডার বিভিন্ন দেশ দিয়েছে। বোয়িং কোম্পানি তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী সরবরাহ করবে। অর্ডারের বোয়িং পেতে অনেক সময় লাগবে। বাংলাদেশের অতি দ্রুত কিছু বোয়িং দরকার। আগামী দুই-এক বছরের মধ্যে হয়তো কিছু বিমান পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ বিমানের বহর বাড়াতে হবে। এই পরিকল্পনা সরকারের আগে থেকেই ছিল। আগে ১৪টি বোয়িংয়ের অর্ডার ছিল। রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ ইস্যুতে ২৫টি করা হয়েছে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির চুক্তি করেছি। বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরা সয়াবিন আমদানির চিন্তা করছে। সেজন্য তারা বসবে। সরকার যখন ইউএসটিআর এর সঙ্গে বসবে, তখন বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরাও যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন তেলসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসবেন। আশা করি, তাদের মধ্যেও একটি সমঝোতা হবে। আগেই তাদের তুলা কেনার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখনো তুলা তাদের কাছ থেকে আমদানি করা হয়। তবে সেটি এখন কমে গেছে। এভাবেই প্রত্যাশা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়বে।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন