চট্টগ্রাম: সংঘর্ষে আহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মামুন মিয়াকে হাঁটানোর বিষয়টি নিয়ে এবার বিবৃতি দিলেন পার্কভিউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুই শিক্ষার্থীকে নিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
সম্প্রতি মামুনকে হাঁটানোর একটি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে আলোচনা তৈরি হয়েছিল, সেটিকে চিকিৎসার ‘স্বাভাবিক অংশ’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিবৃতিতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল হোসেনের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, রোগীকে দ্রুত হাঁটাচলা করানোকে আমরা উৎসাহিত করি।
চিকিৎসক ইসমাইল আরও বলেন, ইমতিয়াজকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখন তার জ্ঞানের মাত্রা ছিল মাত্র ৪ এবং সে পরিপূর্ণ শকে ছিল। আমরা প্রথমে তিন ব্যাগ রক্ত দিয়ে তাকে স্থিতিশীল করি, এরপর অপারেশনে নিয়ে যাই। অস্ত্রোপচারে দেখা যায়, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথার খুলি দুই ভাগ হয়ে মস্তিষ্কের পর্দা ও একাধিক রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে সেই রক্তনালীগুলো মেরামত করা হয়।
একই বিবৃতিতে চবির আরেক শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ সায়েমের শারীরিক অবস্থাও তুলে ধরা হয়। টানা সাত দিন আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তাকে লাইফ সাপোর্ট থেকে বের করা হয়েছে। ডা. ইসমাইল জানান, এখন সে পরিপূর্ণভাবে তার বাবাকে এবং অন্যদের চিনতে পারছে। আমরা আশা করছি, দু-এক দিনের মধ্যেই তাকে কেবিনে স্থানান্তর করতে পারব।
দুই শিক্ষার্থীর সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের জ্ঞানের মাত্রা হলো ১৫ এবং সর্বনিম্ন মাত্রা ৩, যা মৃত্যুর নির্দেশক। ইমতিয়াজের জ্ঞানের মাত্রা ছিল ৪ এবং মামুনের ছিল ৫, অর্থাৎ তারা মৃত্যুর খুব কাছাকাছি ছিল। আল্লাহর রহমতে, চিকিৎসার পর এখন দুজনেরই জ্ঞানের মাত্রা ১৫, যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ টি এম রেজাউল করিম বলেন, ইমতিয়াজ সবাইকে চিনতে পারছে, হাত-পা মুভমেন্ট করছে। তবে তার বাঁ পাশটা একটু কম রেসপন্সিভ। সেটি ফিজিওথেরাপি দিলে ঠিক হয়ে যাবে।
গত ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এই দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এমআর/টিসি