চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা না করে ‘আদু ভাই’ হয়ে যায় অনেকে। প্রথম বর্ষ থেকেই পরিকল্পিতভাবে পড়াশোনা না করায় অনেকে ১০ বছরেও অনার্স শেষ করতে পারে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৪-২৫ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত ফ্রেশার রিসিপশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামে শিবির সেক্রেটারি এসব কথা বলেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ড সংলগ্ন বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত এ প্রোগ্রাম উদ্বোধন করেন চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চবি শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলী। প্রধান অতিথি ছিলেন শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, আমরা স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছি আর সেই স্বপ্ন হতে হবে আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার। শিক্ষার্থীরা নানা প্রত্যাশা নিয়ে ভর্তি হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সুবিধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। খাবারের মান খারাপ হওয়ায় ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এত কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে লাভ কি, যদি তারা শিক্ষার্থীদের কাজে না আসে?
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমেন বলেন, আপনারা ফ্যাসিবাদমুক্ত করেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছেন। আগামীর বাংলাদেশকে বৈষম্যমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, কেননা এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনাদের সহপাঠীরা রক্ত দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনারা স্বাধীন, তবে স্বাধীনতা মানেই নেতিবাচক কাজে জড়িয়ে পড়া নয়। যোগ্য নেতৃত্ব গড়তে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে শিক্ষার্থী না থাকলেও লাইব্রেরিতে বিসিএস পড়ার জন্য ভিড় লেগে থাকে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ক্যাডার তৈরির জায়গা নয়; গবেষণা ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির স্থান। রাষ্ট্র এখনো সেরকম শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে পারেনি। বেকারত্ব বাড়ছে, আমরা মনস্তাত্ত্বিক দাসে পরিণত হচ্ছি। জ্ঞান ও গবেষণায় বাংলাদেশ এখনও অনেক পিছিয়ে।
তিনি বলেন, মাত্র ৫ শতাংশ মানুষের হাতে দেশের ৮০ শতাংশ সম্পদ বন্দি। চট্টগ্রামের এস আলম একাই ১২টি ব্যাংকের টাকা লুট করেছে। আগে ডাকাতি করতে বন্দুক নিয়ে যেতে হতো, এখন শুধু ব্যাংক খুলে বসলেই হয়।
শিক্ষাখাতের বৈষম্যের প্রসঙ্গ তুলে শিবির সেক্রেটারি বলেন, একজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর পেছনে সরকার বছরে ব্যয় করে ১০ হাজার টাকা, স্কুলশিক্ষার্থীর পেছনে ২৫ হাজার টাকা আর ক্যাডেট কলেজ শিক্ষার্থীর জন্য খরচ হয় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এভাবে রাষ্ট্র মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম বৈষম্য করছে।
এমএ/টিসি