চট্টগ্রাম: হালদা নদী থেকে সাড়ে ১২ কেজি ও প্রায় সাড়ে ৮ কেজি ওজনের দুটি মৃত কাতলা ব্রুড মাছ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে মাছ দুটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি পাঠানো হয়।
রোববার (২২ জুন) বিকেল পাঁচটার দিকে হালদা নদীর রামদাস মুন্সীর হাট সংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নৌ পুলিশ ফাঁড়ি উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রমজান আলী উদ্ধার করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও হালদা নদী গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, গত বছরও হালদা নদীতে জুন মাসে প্রায় ৭টি ব্রুড মাছের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এরোমোনাস সাধারণত সুযোগসন্ধানী (Opportunistic) রোগসৃষ্টিকারী, অর্থাৎ এটি শক্তিশালী, স্বাস্থ্যবান মাছকে সহজে আক্রান্ত করতে পারে না, কিন্তু দুর্বল বা চাপগ্রস্ত মাছকে মারাত্মকভাবে সংক্রমিত করে। বিশেষ করে যখন পানি দূষণ কৃষি বা শিল্প বর্জ্য, জৈব পদার্থের আধিক্য এরোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি উৎসাহিত করে। ব্রুড মাছ ডিম ছাড়ার সময় শারীরিকভাবে দুর্বল হয় এবং হরমোনজনিত চাপে ভোগে ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
মাছের ডিম ছাড়ার কয়েকদিন পর কোরবানির গরুর চামড়া, নাড়িভুঁড়ি হালদা নদীতে ফেলার ফলে এই ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাছাড়াও কয়েকদিন আগে ব্যাপক বৃষ্টির পানির সাথে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পচে নদীর পানির রং পরিবর্তন করে ফেলেছে। এতে নদীর পানিতে মাত্রা অতিরিক্ত এমোনিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের দূষণকে ইউট্রোফিকেশন বলে। নদী থেকে সংগৃহীত মৃত ব্রুড মাছগুলোতে এরোমোনাস সংক্রমণের নিম্নোক্ত লক্ষণ সমূহ দেখা যায়। ত্বকে লাল ঘা বা আলসার, পাখনার গোড়া পচা। ফুলকা ফ্যাকাশে বা পচন ধরা। পেট ফোলা বা চোখ ফুলে যাওয়া (Exophthalmia)। উপরোক্ত তথ্য থেকে ধারণা করছি এই দূষণের ফলে সুযোগ সন্ধানী এরোমোনাস ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের ফলে ব্রুড মাছগুলোর মৃত্যু হয়েছে।
বিই/পিডি/টিসি