পরিচিতজন বা প্রিয়জনের প্রয়োজনে টাকা পাঠিয়ে পাশে থাকার ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। বিপদে পড়লে বা অন্য কোনো প্রয়োজনে কাছের মানুষকে টাকা পাঠাতে অনুরোধ করেন অনেকেই।
হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইমোর মতো জনপ্রিয় সামাজিক ম্যাসেজিং অ্যাপ এখন মানুষের নিত্যদিনের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। কৌশলে গ্রাহককে প্রতারিত করে এসব অ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে প্রতারকরা। নিজেদের একটু অসচেতনতার কারণে প্রতারিত হচ্ছেন মানুষ।
প্রতারণার শিকার হওয়া এমনই একজন রাব্বী। ঢাকার একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। হঠাৎ করেই তার ম্যাসেজিং অ্যাপ থেকে তার পরিচিত সবার কাছে মেসেজ যায়, জরুরিভিত্তিতে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে। সেই বার্তাটি বিশ্বাস করে বেশ কয়েকজন কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই টাকা পাঠিয়ে দেয় মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে। রাব্বীর মতো এমন অনেকের হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারের মতো জনপ্রিয় ম্যাসেজিং অ্যাপ থেকে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে হরহামেশাই মূল্যবান অর্থ হারাচ্ছে মানুষ।
মোবাইলে এমন প্রতারণা এড়াতে যে বিষয় খেয়াল রাখা দরকার
* আপনার অতি নিকটাত্মীয় বা আপনজন বা খুব পরিচিত কেউও যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নক করে টাকা চায় তবে টাকা দেওয়ার আগে তার সঙ্গে ফোন করে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিন।
* আপনার পরিচিত বা প্রিয়জন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, কোথাও আটকা পড়েছে বা অন্যকোনো বিপদের কথা বলে আপনার কাছে কেউ টাকা চাইতে পারে। পাঠানোর আগে যাচাই করুন, নিশ্চিত হোন।
* তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে এমন অনেক দেশে কোনো একজন ব্যক্তির মতো দেখতে ভিডিও বানিয়ে কল করে প্রতারণা করা হচ্ছে, যাকে ডিপ-ফেক বলা হয়। আমাদের দেশে কাছের মানুষের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা হয় কখনো কখনো।
* আত্মীয় হোক, পরিচিত বা অপিরিচিত বা অল্প পরিচিত হোক টাকা লেনদেনের আগে অবশ্যই যাচাই করুন। তারপর টাকা পাঠান।
* সব সময় সামাজিক যোগাযোগ অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয় এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহার হয়। তাই কোনো ধরনের লেনদেনে যাওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন।
* টাকা দ্বিগুণ হবে, অল্প দামে পণ্য পাওয়া যাবে, চাকরি পাবেন, পুরস্কার, লটারি জিতেছেন, এমন সব প্রলোভনের মেসেজ বা কল এড়িয়ে চলুন।
* যদি কেউ অপ্রত্যাশিতভাবে আপনাকে দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দেয়, তাহলে তা সন্দেহজনক মনে করুন।
* নিজেদের ম্যাসেজিং অ্যাপগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
ডিজিটাল সেবা জীবনে অনেক সুবিধা যোগ করেছে। প্রতারণা থেকে বাঁচতে সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। ফলে যে কেউ টাকা চাইলে শুরুতে সন্দেহ করতে হবে, এরপর যাচাই করতে হবে। সবশেষে নিশ্চিত হলে তবেই কেবল টাকা পাঠাতে হবে।
এএটি